রংপুরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ঘাটক নদী| আর সেই নদীর তীরে অবস্থিত সেনা পার্ক|মূলত নদীর তীরে অবস্থিত এ পার্টি সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত| অনেক শান্ত মনোরম পরিবেশে পার্ক টি অবস্থিত হওয়ায় বিকেলের দিকে দর্শনার্থীরা বের করে| নদীর ধারে রিমঝিম বাতাস এবং শান্ত আবহাওয়া যে কারো মন ভালো করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট|
পার্কের অবস্থান: রংপুর শহরের নিসবেদগঞ্জ রাস্তার পাশে এই বিনোদর পার্ক অবস্থিত|পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছিল ২০১৩ সালে| আপনারা চাইলে অবাক হবেন যে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত এই পার্কের উপার্জনের প্রায় ৭৫ শতাংশ প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়| যদি এ পার্কে কাপলদের আনাগোনাটা একটু বেশি দেখা যায়| এখানে মুখোমুখি বসার জন্য অনেক জায়গা করা আছে যেখানে কাপলরা বসে আড্ডা দেয়|ফলে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়াটা একটু বেমানান হয়ে পড়েছে বর্তমান সময়ে|
প্রয়াস সেনা পার্কে যা যা দেখতে পাবেন:
সেটা পার্কের দুই পাশে লোহার গ্রিল দিয়ে সাজানো আছে, গ্রিলের ওপর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সবুজ লতা পাতায় ছেয়ে গেছে| শিশুদের জন্য দোলনা ও খেলাধুলার সরঞ্জাম রাখা আছে| সড়কের দুই ধারে বসার স্থান এবং ছোট ছোট টঙের দোকান আছে|
পার্কের ভেতরে নদীর মধ্যে একটি ছোট্ট দ্বীপ করা হয়েছে| যেটির নাম ছেড়া দ্বীপ| পার্কের ভেতরে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো নৌকা ভ্রমন|নৌকা ভ্রমণ করে দর্শনার্থীরা সবচেয়ে বেশি আনন্দ উপভোগ করে|
পার্কের ভেতরের তৃপ্তিতে রয়েছে প্রায় দেড়শ রকমের বিভিন্ন ধরনের ফুল ও ফলের গাছ| এ কথার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পলাশ, চেরি ফুল, মিশ্রি ডুমুর, সোনালু, সবেদা, পানিয়াল ইত্যাদি| এখানে ফুল ফলের পাশাপাশি অনেক ধরনের ঔষধি গাছও লাগানো আছে| সবকিছু মিলিয়ে সবুজের সমারোহে এক মনোরম পরিবেশ তৈরি হয়েছে এখানে|
কিভাবে আসবেন এই পার্কে:এগুলো বাংলাদেশের যেকোনো শহর থেকে সরাসরি রংপুরের বাস পাবেন| রাজধানী ঢাকার কল্যাণপুর গাবতলী মহাখালী মোহাম্মদপুর থেকে সরাসরি রংপুরগামী বাস চলাচল করে|যতই ভালো লাগবে ৭০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত|
এছাড়াও ঢাকা থেকে সরাসরি রংপুরগামী ট্রেনে করেও আসতে পারবেন| ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস সবচেয়ে বেশি সুবিধা জনক|শোভন চেয়ারের ভাড়া ৪৭০ এবং এসি কেবিনের ভাড়া ১৭০০ টাকা|
বিশেষ দ্রষ্টব্য: ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন হতে পারে| টিকিট কাটার পূর্বে সময়সূচি ভালোভাবে দেখে নিন|
থাকা ও খাওয়া: রংপুরে রাত্রে যাপনের জন্য অনেক আবাসিক হোটেল আছে| পার্কের আশেপাশে তেমন কোন আবাসিক হোটেল নেই| তবে রংপুর শহরে যে আবাসিক হোটেল গুলো আছে সেখানে রুমপ্রতি ৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া লাগবে|
খাবার জন্য পার্ক থেকে একটু দূরে রংপুর শহরে এসে বেশ ভালো মানের কিছু রেস্টুরেন্ট পাবেন| এসকল রেস্টুরেন্টের কালা ভুনার সাদ-অসাধারণ| যা ভ্রমণ পিপাসু দর্শনার্থীদের বিশেষ তৃপ্তি দিয়ে থাকে|তবে আপনি যদি কিছুকালের সময় রংপুর ভ্রমণ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই রংপুরের হাড়িভাঙ্গা আম খেয়ে আসবেন|
রংপুরের হোটেল গুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো:
- হোটেল কাশফিয়া
- হোটেল গোল্ডেন টাওয়ার
- হোটেল পর্যটন হোটেল
- নর্থ ভিউ
- হোটেল তিলোত্তমা
সতর্কতা: রংপুরের এই পার্কটিতে কাপলদের আনাগোনা অনেক বেশি থাকে| কিন্তু একটি বিষয় মাথায় রাখবেন এই পার্কটি সেনাবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত| তাই মাথায় রাখবেন যেন কোন ধরনের অশ্লীলতা না হয়| পার্টির ভেতরে পরিবার বন্ধু বান্ধব এবং বড় পরিসরে পিকনিকের আয়োজন করার জন্য যথেষ্ট জায়গা রয়েছে|
রংপুরের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান:
- তাজহাট জমিদার বাড়ি
- ভিন্ন জগৎ পার্ক
- লালদীঘি ৯ গম্বুজ মসজিদ
- প্রয়াস সেনা বিনোদন পার্ক