পায়রাবন্দ সম্পর্কে জানুন
পায়রাবন্দ মূলত একটি গ্রামের নাম| তবে সাধারণ গ্রামটিকে বাংলার মানুষ খুব ভালোভাবে মনে রেখেছে| নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে আমরা যাকে চিনে থাকি তার বাসভূমি এই পায়রাবন্দে| মূলত তার পরিচয় এই গ্রামটির পুরো দেশের কাছে পরিচিত|পায়রাবন্দ মিঠাপুকুর উপজেলার একটি গ্রাম|যে সময় বেগম রোকেয়ার জন্ম হয়েছিল তখন নারীদেরকে বেশ পর্দা সহিত রাখা হতো| বেগম রোকেয়ার জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর| তার বাবা ছিলেন জহির উদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার এবং মাতার রাহাতুন্নেছা সাবেরা চৌধুরানী| সে সময়ের রীতি অনুযায়ী বেগম রোকেয়াকে নিজের বাসায় আরবি এবং উর্দু শিক্ষা দেওয়া হত|
কিন্তু বেগম রোকেয়া তার বড় ভাইয়ের কাছে গোপনে গোপনে বাংলায় এবং ইংরেজি শিখতে থাকে| পরবর্তীতে বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয় ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে| বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয় ১৮৯৬ সালে| সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন অত্যন্ত ভালো মনের একজন মানুষ ছিলেন, তিনি তার স্ত্রী রোকেয়াকে লেখালেখি করতে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করত| বড় ভাই এবং তার স্বামীর হাত ধরে ১৯০২ সালে পিপাসা নামক একটি গল্পের মাধ্যমে তার পদার্পণ হয় সাহিত্যের জীবনে|
রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
রোকেয়ার সাখাওয়াত হোসেন:বাংলার নারীদেরকে নতুন এক জাগরণের মধ্য দিয়ে যিনি নিয়ে এসেছেন তার নামই হলেন রোকেয়া সাখাওয়াত| সমাজের পেছনে পড়ে থাকা নারীদের কে নতুন নতুন পথ শিখিয়েছে| নারীদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত করেছে|| ঘরে ঘরে গিয়ে শিক্ষা দিয়েছে| মোটকথা নারী জাগরণ নিয়ে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম|বেগম রোকেয়ার সম্মানার্থে তার বাড়ির পাশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি স্মৃতি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়| যা ৩.১৫ একর জমির উপর| এখানে মূলত বেগম রোকেয়ার একটি পিতলের তৈরি ভাস্কর্য, গেস্ট হাউস ,লাইব্রেরী ,গবেষণা কক্ষ, অফিস ভবন ও নান্দনিক বাগান রয়েছে|
তবে বেগম রোকেয়ার মূল বাড়িতে তেমন কোন পরিবর্তন বা রক্ষণাবেক্ষণ কাজ দেখা যায় না| বর্তমানে ইটের গাঁথুনি ছাড়া আর তেমন কিছু সেখানে নেই|
কিভাবে যাবেন: বাস অথবা ট্রেনে রংপুর শহরে আসতে হবে| রাজধানী থেকে রংপুরের বাস ভাড়া ৭৫০ থেকে 2 হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে| ট্রেনের টিকিট শুরু ৪০০ টাকা থেকে| রংপুর শহর থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে এই পায়রা বন্দ গ্রাম| তাই রংপুর শহরে এসে যে কোন রিক্সা সিএনজি করে ৩০ থেকে ৫০ টাকায় রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্তম্ভে পৌঁছাতে পারবেন|
খাওয়া ও থাকা: রংপুর শহরে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে| হোটেল নর্থপিও হোটেল হোটেল হোটেল কাপাসিয়া হোটেল তিলোত্তমা এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য| রাত্রে যাপনের জন্য এই হোটেল গুলোতে ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে রুম পেয়ে যাবেন|
রংপুর শহরে বেশ কিছু নামিদামি রেস্টুরেন্ট আছে| এ ক্ষেত্রে আপনারা মিঠুপুর উপজেলায় খাওয়া-দাওয়া না করে রংপুর শহরে এসে খাওয়া দাওয়া করাটা সবথেকে ভালো হবে| কথিত আছে যে রংপুরে রেস্টুরেন্ট গুলোতে কালা ভুনার স্বাদ অতুলনীয়| তার উপরে গেলে অবশ্যই এখানকার রেস্টুরেন্টের কালাভুনা খেয়ে আসবেন|
[…] পায়রাবন্দ […]
[…] পায়রাবন্দ […]